প্রতিবছর দেশে প্রায় ২ কোটি মোবাইল ফোনের বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। মূলত নতুন গ্রাহক ও পুরনো গ্রাহকের ফোন নষ্ট হওয়ার কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে এ বাজার। এ কারণে ১ বছরের ব্যবধানে দেশে মোবাইল ফোনসেটের আমদানি আড়াই গুণ বেড়েছে। দিন দিন এ পণ্যেও বাজার বাড়ায় চোরাই পথেও বিপুল পরিমাণ ফোনসেট ঢুকছে দেশে। এতে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহকরাও। তবে এদেশে মোবাইল ফোনসেটের বিশাল বাজার বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি কোম্পানিই স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনসেট অ্যাসেম্বলিংয়ের কাজ শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রতিবছর দেশে যে পরিমাণ মোবাইল ফোনসেট এবং ফোনের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য সরঞ্জাম আমদানি হচ্ছে তার সঠিক শুল্কায়ন হলে এ খাতে প্রবৃদ্ধি আড়াই গুণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১১-�১২ অর্থবছরে এসব পণ্য আমদানির এলসি খোলার হার বেড়েছে ১২৯ শতাংশ। আর এলসি নিষ্পত্তির হার বেড়েছে ১শ� শতাংশ। ব্যবসায়ীরা ওই অর্থবছরে প্রায় ২৯ কোটি ডলার মূল্যেও মোবাইল ফোনসেট আমদানি করেছে। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৪৪ শতাংশ বেশি। মূলত প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে প্রতি বছরই দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে সম্প্রসারিত হচ্ছে মোবাইল ফোনসেটের বাজারও। তবে আমদানিকারকদের অভিযোগ, দেশে বৈধপথে যে পরিমাণ মোবাইল ফোনসেট আসে অবৈধ পথে আসছে তার অনেক বেশি। অবৈধ পথে আসা ফোনসেটের কোনো রাজস্বই সরকার পাচ্ছে না। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়ছে। এক্ষেত্রে আমদানি মোবাইল ফোনসেট আমদানিকারকদের দাবি, আমদানি মূল্যের সাড়ে ১২ শতাংশ শুল্কের বদলে সেটপ্রতি ১শ� বা ২শ� টাকা শুল্ক ধার্য করা হলে আমদানি আরো বাড়বে।ফেয়ার নিউজ
সূত্র জানায়, বর্তমানে এদেশের বাজারে বেশকিছু ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোনসেটের পাশাপাশি বিপুল নন-ব্র্যান্ডেড মোবাইল ফোনসেটও রয়েছে। নকিয়া, স্যামসাং, সনি এরিকসন, সিমেন্স, এলজি, মটোরোলাসহ বিশ্নের নামকরা কিছু কোম্পানি তাদের তৈরি মোবাইল ফোনসেট এদেশে সরাসরি বাজারজাত করলেও বাজারে চীন থেকে আমদানিকৃত নিম্নমানের সেটের পরিমাণই বেশি। আর স্বল্পমূল্যে এসব সেটের বিক্রিও প্রচুর। এ পরিস্থিতিতে টেলিফোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিম্নমানের মোবাইল ফোনসেট কেনা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে চীন থেকে ব্যাপক হারে নকল ও নিম্নমানের মোবাইল ফোনসেট দেশে আসছে। মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমেই অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব ফোনসেট দেশে আনছে। এ বিষয়ে ক্রেতা ও আমদানি সংশ্লিষ্টদেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিটিআরসি।
সূত্র আরো জানায়, বিটিআরসি�র তথ্য মতে গত আগস্ট মাস পর্যন্ত দেশে কার্যকর মোবাইল সিমের সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৫৪ লাখ। আর গত জুন শেষে এদেশে কার্যকর মোবাইল সিমের পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৩৭ লাখ ৯৯ হাজার। ২০১১ সালের জুন শেষে দেশে কার্যকর সিমের পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৩৪ হাজার। কিন্তু ১ বছরের ব্যবধানে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার সিমের ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমানে এদেশে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি এসব সিমের সেবা দিচ্ছে। এসব কোম্পানি বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারেরও সুযোগ দিচ্ছে। ফলে তরুণ প্রজন্মসহ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারকারীরা এ সুবিধা নিচ্ছেন। যার ফলে এদেশে মোবাইল ফোনসেটের বাজারও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়