কানাইঘাট পৌর এলাকার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অনাহারে অর্ধহারে জীবন যাপন করছেন। শত শত ুধার্ত মানুষকে ত্রাণের অপোয় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জড়ো হতে দেখা গেছে। তবে তারা ত্রাণ সামগ্রী পান নি। ৯০ শতাংশ পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং ডিপ টিউবয়েল, নলকূপ বিকল হয়ে যাওয়ায় সর্বত্র বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে অনেকে বন্যার ময়লাযুক্ত পানি খেয়ে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সরকারীভাবে উপজেলায় বন্যা দুর্গতদের জন্য মাত্র ৩৬মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৮০হাজার টাকা বরাদ্ধ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল্য বলে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত বানবাসী মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী পৌছেনি। দু’একদিনের মধ্যে সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত ত্রাণ সামগ্রী ৯টি ইউনিয়নে বিতরণ শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বন্যায় সবচেয়ে তিগ্রস্থ ১নং লীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নে সরকারীভাবে বরাদ্ধ প্রাপ্ত ৪ মেট্রিক টন চাল নগদ আট হাজার টাকা ও খাবার স্যালাইন বানবাসী মানুষের মাঝে ঘুরে ঘুরে বিতরণ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, সিলেটের অতিরিক্ত একজন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ ফয়েজ আহমদ। এছাড়া সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মিজানুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার কানাইঘাট, পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি কানাইঘাট পৌরসভার উদ্যোগে রামিজা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। কানাইঘাট পৌরসভার পৌরসভার মেয়র লুৎফুর রহমান, পৌর এলাকার কয়েকশত বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম. সোহরাব হোসেন, আ’লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন আল মিজানসহ পৌরসভার কাউন্সিলাররা উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইতিমধ্যে সরকারীভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল ও নগদ টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে। বরাদ্ধের পরিমাণ আরো বাড়বে বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিকে কানাইঘাট বাজার ও উপজেলা সদরের অনেক স্থান থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগ মারাত্মক আকার ধারন করেছে। তলিয়ে যাওয়া কানাইঘাট-দরবস্ত ও গাজী বুরহান উদ্দিন সড়ক থেকে পানি নেমে গেলেও এ দুটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে বিরাট বিরাট গর্তের সৃষ্টি ও রাস্তা দেবে যাওয়ায় সিলেটের সাথে কানাইঘাটের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি বেড়েছে কয়েকগুণ। সরকারীভাবে অপ্রতুল্য ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্ধ দেওয়ায় ােভ প্রকাশ করেছেন ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বানবাসী মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কানাইঘাটকে বন্যা দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবী জানিয়েছেন তারা। সেই সাথে সরকারীভাবে প্রতিদিন বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরনের দাবী তাদের। এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। গত দু’দিন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে সাবেক সংসদ সদস্য জামায়াত নেতা অধ্য মাওঃ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বানবাসী মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। উপজেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ১নং লীপ্রসাদ, ২নং লী প্রসাদ পশ্চিম, ৩নং দিঘীর পার পূর্ব ও ৪নং সাঁতবাক ইউনিয়নের বন্যা আক্রান্ত বিভিন্ন গ্রামের নারী পুরুষের মাঝে চিরা, মুড়ি, গুড়, ঔষধপত্র বিতরণ করেন। ত্রাণ বিতরণ কালে জমিয়ত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওঃ এবাদুর রহমান, মুফতি এহসান উল্লাহ, মাওঃ হেলাল আহমদ, পৌর জমিয়ত নেতা মাওঃ খালিদ আহমদ,মাওঃ নজরুল ইসলাম, প্রবাসী জমিয়ত নেতা হাফিজ মাহমুদ হোসেন, হাফিজ ইকবাল, মাওঃ নুরুল ইসলাম, হাফিজ হেলাল প্রমুখ।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়