অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আজ। আমাদের জাতিসত্তা বিকাশের দিন। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মারক মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে দিনটি আজ সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও পালিত হবে। দিনটি বাঙালির ভাষা আন্দোলনসহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনন্য গৌরবের দিন। স্বজন হারানোর বেদনাদীর্ণ শোকের দিন। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়ার প্রথম নজির। কালক্রমে সেই শোকের দিন উত্তীর্ণ হয়েছে বাঙালির জাগরণের মহাশক্তির প্রতীক হিসেবে।১৯৪৮ সালে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবির মধ্য দিয়ে যে সংগ্রামের শুরু, বায়ান্নতে সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি রক্তের আখরে। ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষারূপে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঢাকার রাজপথে প্রাণ উৎসর্গ করেন সালাম, জব্বার, রফিক, সফিউদ্দিন, বরকতসহ বাংলার বীর তরুণরা। সেই থেকে দিনটি মহান শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।সোমবার মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সারি দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সবাই ফুল নিয়ে অপেক্ষায় ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে প্রথমে ফুল দেন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। কয়েক মিনিট পর ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এরপর রাষ্ট্রপতি শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ছেড়ে যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রি পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন সংসদের ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী।সংসদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন ১২টা ২১ মিনিটে। এর পরপর তিনি দলের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান তিন বাহিনীর প্রধান, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তাদের শ্রদ্ধা জানানোর পর শুরু হয় রাজনৈতিক দলগুলোসহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের এই পালা চলবে মঙ্গলবার সকালে নামবে মানুষের ঢল। সবার কণ্ঠে থাকবে অমর সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…’।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়